এর আগে অর্জুন গাছ নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছিলাম। মাহে রমজান চলছে, বাংলাদেশের অধিকাংশ রোজাদার তাদের দাঁত মাজার জন্য যে গাছের ডালটি ব্যবহার করে তা হল নিম গাছের ডাল। আজ আমি বহুল আলোচিত নিম গাছ নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি এর সঙ্গে পরিচয় করে দেবার জন্য।
তাহলে জেনে নেই এর পরিচিতিঃ-
প্রচলিত নাম- নিম
ইউনানী নাম- নীম
আয়ুর্বেদিক নাম- নিম্ব
ইংরেজী নাম- Neem tree
বৈজ্ঞানিক নাম- Azadirachta indica A. Juss
পরিবার- Meliaceae
কথায় আছে একটি বাড়ীতে যদি নিম গাছ থাকে তবে ঐ বাড়ী থেকে রোগ বালাই দূরে থাকে। এমনকি পোকা- মাকড় ও সে বাড়ীতে কম দেখা যায়। এখনও বাংলাদেশের বড় বড় গৃহস্থদের বাড়ীতে ধান থেকে চাউল করার পর চাউলের ডোলে নিম পাতা দিয়ে রাখা হয়, যেন চাউলে পোকা আক্রমন না করে, এ পদ্ধতিটি পরীক্ষিত। এর আরও বহু গুনাগুন লোকে মুখে শোনা যায় প্রত্যহ নিমের পাতার রস এক কাপ করে খেলে চর্ম রোগ, কৃমি নিরসন ও জ্বর থেকে উপশম পাওয়া যায়।
নিম গাছ বাংলাদেশের প্রায় সবখানে পাওয়া যায়, বৃহদাকারের বৃক্ষ। মার্চ- এপ্রিল মাসের দিকে ফুল হয়। ফুল শ্বেতবর্ণ এবং ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ, পাকলে পীতবর্ণ বা হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
নিমে যে সমস্ত রাসায়নিক উপাদান পাওয়া যায়- পাতা, ছাল, ফুল, ফল ও বিচির তেলে প্রচুর সংখ্যক তিক্ত উপাদান যেমন, নিম্বিন, নিম্বিডিন, নিম্বিনিন ইত্যাদি টাপ্রিনিয়েড, গ্লাইকোসাইড, অ্যালকালয়েড ও ট্যানিন বিদ্যমান।
নিমের যে সমস্ত অংশ ব্যবহার করা হয়- ফুল, পাতা, ছাল, ফল বা বীজ ও তেল।
নিমের গুনাগুন- রক্ত পরিস্কারক, চর্মরোগ নাশক, ব্রণ, কৃমি, কুষ্ঠ ও ক্ষত নিবারক, শরীরের জ্বালা পোড়া, এলারজি এবং মুখের দুর্গন্ধ নাশক, দাঁতের মাড়ি সবল কারক।
এবার আসুন বিভিন্ন রোগে এর ব্যবহার বিধিটি জানি আমরা-
- রক্ত পরিস্কারক ও চর্মরোগে পাতা(কাচা) ১০গ্রাম ৩ কাপ পানিতে জ্বাল করে ১ কাপ অবশিষ্ঠ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিয়ে নির্যাস টুকু চিনি সহ প্রতিদিন ২-৩ বার খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
- কৃমি নিরসনে ছাল চূর্ণ ৩-৪ গ্রাম সামান্য সৈন্দব লবন সহ সকালে খালি পেটে ১ সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যাবে।
- খোঁস পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষতে পাতা (কাঁচা ) প্রয়োজনমত কাঁচা হলুদ মিশিয়ে ভালভাবে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ দিতে হবে ৭-১০ দিন।
আশাকরি আপনাদের বাড়ীতে একটি করে নিম গাছ লাগাবেন এবং এর সম্পর্কে আরও জানার চেষ্টা করবেন। জানেন তো নিম গাছের কাঠ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরি করলে তাতে ঘুন ধরেনা। আজ এই পর্যন্ত। সবাই ভাল ও সুস্থ্য থাকুন।
ধন্যবাদ সহ-
মোঃ জাকির হোসেন
০৩.০৮.২০১১
আমার আরও লেখা পিসি হেল্পলাইন বিডিতে দেখতে পারেন।
Tags:
বাংলার উদ্ভিৎ
Leave a comment